Header Ads

  • সর্বশেষ খবর

    আখ বিক্রি করে টাকা না পেয়ে আড়ানী আখ ক্রয় কেন্দ্রে চাষিদের তালা

    বাঘা প্রতিনিধি:
    রাজশাহী চিনি কলে আখ বিক্রি করেও টাকা পাচ্ছেনা চাষিরা।  প্রায় তিন মাস আগে চিনি কলে আখ দেয়া হলেও টাকা দেয়া হয়নি। ফলে আখ চাষিরা একত্রিত হয়ে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আড়ানী সাবজোন অফিসে তালা লাগিয়ে দিয়েছে।

    রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী সাবজোনের আটটি আখ ক্রয় কেন্দ্রের চাষিরা এমন মহাদুর্ভোগে পড়েছে।

    জানা যায়, আড়ানী সাবজোনের অধীনে ৮টি আখ ক্রয় কেন্দ্র রয়েছে। এ আখ ক্রয় কেন্দ্রে প্রায় চাষি রয়েছে এক হাজার ৫ শতাধিক। তারা ম্যাসেজের মাধ্যমে পূর্জি পেয়েছেন। এ পূর্জি মোতাবেক চাষিরা আখ সরবরাহ করেন। কিন্তু তাদের আখ দেয়ার প্রায় তিন মাস অতিবাহিত হলেও চাষিদের টাকা দেয়া হয়নি। নিরুপায় হয়ে চাষিরা আড়ানী সাবজোন অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে।

    রাজশাহী চিনি কলের আখ মাড়াই আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধণ করা হয় ২৩ নভেম্বর। আখ ক্রয় কেন্দ্রগুলোর আখ ক্রয় শুরু করেন ২২ নভেম্বর। প্রথমের দিকে দুই-একটি বিল চাষিদের দেয়া হলেও পরে আর দেয়া হয়নি।

    আড়ানী আখ ক্রয় কেন্দ্রের কুশাবড়িয়া ইউনিটের আখ চাষি রুবেন আলী বলেন, আমি যে আখ দিয়েছি, সে মোতাবেক চিনি কল থেকে ৮০ হাজার টাকা পাওনা হয়েছে। আমাকে টাকা পরিশোধ করা হয়নি। অন্যান্যা আবাদ করতে ও লেবারের টাকা পরিশোধ করতে নিজের শখের মোটরসাইকেলটি বিক্রি করে লেবারদের টাকা দিয়েছি। টাকা না পাওয়া আমরা চাষিরা একত্রিত হয়ে অফিসে তালা মারা হয়েছে।

    আড়ানী আখ ক্রয় কেন্দ্রের নুরনগর ইউনিটের আখ চাষি বজলুর রহমান বলেন, আমি প্রায় ৩ লক্ষ টাকার আখ দিয়েছি। এছাড়া আড়ানী আখ কেন্দ্রের ঠিকাদার হিসেবে কাজ করেছি। আখ বিক্রি ও ঠিকাদরের একটি টাকাও পায়নি। বারবার চিনি কলের কর্তৃপক্ষকে টাকা দেয়ার জন্য অনুরোধ করার পর আজও টাকা পরিশোধ করা হয়নি। নিরুপায় হয়ে আড়ানী সাবজোন অফিসের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের বের করে দিয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে।



    আমি ইতেমধ্যে বাড়িতে পালন করা একটি গরু ছিল, সেই গরুটি বিক্রি করে লেবারদের কিছু টাকা দিয়েছি। তারা আরও কিছু টাকা পাবে। চিনি কল টাকা দিতে না পারায় আমিও লেবারদের টাকা দিতে পারছিনা।

    পাঁচপাড়া ইউনিটের আখ চাষি আবদুল মালেক নামের আরেক চাষি বলেন, আমি ৩২ হাজার টাকার আখ দিয়েছি। লোন কেটে নেয়া হয়েছে, কিন্তু অবশিষ্ট টাকা তিন মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও টাকা দেয়া হয়নি। আমি ধার করে চৈতালী আবাদ করেছি। কিন্তু টাকার অভাবে সেই, চৈতালি আবাদ তুলতে পারছিনা। এছাড়া আখ কাটার লেবারের টাকাও পরিশোধ করতে পারেনি। লেবার বারবার টাকা চাচ্ছে, আমি দিতে পারছিনা। ফলে বেকায়দায় রয়েছি।

    আড়ানী আখ ক্রয় কেন্দ্রের সাবজোন প্রধান রুস্তম আলী বলেন, পূর্জি অনুয়ায়ী সিআইসি আখ ক্রয় করেছে। সেমোতাবেক বিলও দিয়েছেন। টাকা পরিশোধ করবেন চিনি কল কর্তৃপক্ষ। তবে অফিসে কাজ করার সময় চাষিরা এসে আমাদের বের করে দিয়ে তারা তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। আমরা অফিসের নির্ধারিত সময় পর্যন্ত বাইরে অপেক্ষা করে নিজ নিজ বাড়িতে চলে এসেছি।

    আড়ানী আখ ক্রয় কেন্দ্রের সিআইসি মোহাম্মদ বশির উদ্দিন বলেন, পূর্জি অনুযায়ী আখ ক্রয় করা হয়েছে। সাথে সাথে চাষিদের বিল দেয়া হয়েছে। তবে চাষিরা কবে টাকা পাবে বা দেয়া হবে এটা আমার জানা নেই।



    রাজশাহী চিনি কলের এমডি আশফাকুর রহমান বলেন, হেড অফিস থেকে আমাদের কাছে টাকা সরবরাহ করা হয়নি। টাকা পেলে তাৎক্ষনিক চাষিদের মাঝে দেয়া হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি অবগত রয়েছেন। রাজশাহী চিনি কলের অধীনে চাষিরা প্রায় ২৬-২৭ কোটি টাকা পাবে।

    তবে কবে নাগাদ এ টাকা চাষিরা পেতে পারেন প্রশ্নের জবাবে তিনি কিছুই জানাতে পারেনি। তবে তিনি জানান আমারা টাকা পেলেই সাথে সাথে চাষিদের টাকা পরিশোধ করবো। তবে শুনেছি চাষিরা আড়ানী সাবজোন অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে।

    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728