বনানীর আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজে যোগ দিলো সেনাবাহিনী

বনানীর বহুতল ভবনে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারকাজে ফায়ারসার্ভিস ও বিমান বাহিনীর সঙ্গে এখন যোগ দিয়েছে সেনাবাহিনী। ভবনটির ভেতরে পানি দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে ক্রেন দিয়ে।

বনানীর ২২ তলা ভবন আর এফ টাওয়ারে আটকে পড়া মানুষজনদের বাঁচাতে কিছুক্ষণ আগে সেনাবাহিনী যোগ দিয়েছে।  এ পর্যন্ত আগুন থেকে বাঁচতে ৪জন লাফ দিয়েছে। এতে তিনজন মারা গেছে। ভবনের ছাদে হেলিকপ্টার দিয়ে উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে।

রাজধানীর বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে নৌবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস। এছাড়া এরমধ্যে যোগ দিয়েছে বিমান বাহিনির দুটি হেলিকপ্টার। ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা ৫৫ মিনিটে টাওয়ারের ৮ বা ৯ তলা থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। ধারনা করা হচ্ছে, শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। ১৯টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে বলে জানিয়েছে ফায়ার কন্ট্রোল রুম।

বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ভবনের ভেতরে আটকে আছে অনেক মানুষ। তারা বলছেন, ভবনে সিঁড়ি লাগিয়ে আমাদের উদ্ধারের চেষ্টা করুন। আমরা ধোঁয়ার কারণে নিশ্বাস নিতে পারছি না। ধোঁয়ায় আমরা মারা যাব। আমাদের বাঁচান। ২২তলা ভবনটিতে বহু লোক আটকা পড়েছে। বাইরে থেকে তাদের কান্নার শব্দ শোনা যাচ্ছে।

ভবনের ভেতরে আটকে পড়া অনেক মানুষ বাঁচার আকুতি জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভ করছে। এমনই একজন কর্মীর লাইভ ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, সিড়ির জন্য তারা আকুতি জানাচ্ছেন। না হয় তারা বাঁচতে পারবেন না বলে জানাচ্ছেন। অনেকে বাঁতে ছাদেও আশ্রয় নিয়েছেন।

দুপুর ২টার দিকে ভেতর থেকে একজন নারী ফেসবুক লাইভে এসে তাদেরকে বাঁচানোর আকুতি জানান। ভিডিওতে শোনা যায় এক নারীর কণ্ঠ। তিনি বারবার বলছেন, ‘আমাদের জন্য সিঁড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। না হলে ধোঁয়ায় আমরা মারা যাবো।’

২টার পর বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ভবনসহ আশপাশের এলাকায় চক্কর দিতে দেখা গেছে একটি হেলিকপ্টারকে। আটকে পড়াদের উদ্ধার এবং লাগোয়া ভবনগুলোতে আগুন ছড়ানো ঠেকাতে প্রয়োজনে বিমান বাহিনীর উদ্ধারকারী দলও কাজে লাগতে পারে বলে জানা গেছে। অনেক আহতদেরকে উদ্ধার করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে, ভবনের ভেতর আটকা পড়েছেন অনেকে। জীবন রক্ষার্থে অনেকে ভবনের ছাদেও আশ্রয় নিয়েছেন। পাশের ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আশেপাশের ভবন থেকেও সরে গেছেন বাসিন্দারা। এছাড়া আগুনের উত্তাপে ভবনের কাঁচ ফেটে যাচ্ছে বলেও জানা গেছে। পাশের ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। আগুন লাগার কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেননি ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।

আশপাশের হাজার হাজার লোকজন জড়ো হয়েছেন ভবনের আশপাশে। উৎসুক জনতার কারণে উদ্ধার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। বনানী সড়ক বন্ধ রয়েছে। চারদিকে আতঙ্ক বিরাজ করছে।