টোল আদায়ের নামে চলছে চাঁদাবাজি, অভিযোগ করেও ব্যবস্থা নিচ্ছেনা প্রশাসন
বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি ঃ
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় দেশজুড়ে অঘোষিত লকডাউনের মধ্যে সবকিছু বন্ধ রাখা হলেও খাবারসহ জরুরী প্রয়োজনীয় যানবাহনগুলো চলাচল করছে। কিন্তু সরকারী সিদ্ধান্ত মোতাবেক সড়কপথে চলাচলকরা এসব যানবাহন থেকে টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌরসভায় টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজির এমন অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ হেডকোয়াটার্স কর্তৃক সর্বশেষ জারীকৃত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সারাদেশে সুষ্ঠপণ্য পরিবহন নিশ্চিতকরনের লক্ষে সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা কর্তৃক মহাসড়কে বিভিন্ন যানবাহন হতে কোন ধরনের টোল আদায় না করার স্বীদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে। কিন্তু কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে টোল আদায়ের নামে নির্বিচারে চাঁদাবাজির করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
সরকারী সীদ্ধান্ত এবং সড়কে পরিবহন চলাচলের নিশ্চিতকরনের দাবিতে, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন রাজশাহী সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়ন। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় হতাশার মধ্যে পড়েছেন অভিযোগকারিরা।
আড়ানী পৌরসভার পিয়াদাপাড়া গ্রামে তৈয়বুর রহমানের ছেলে ফারুক হোসেন ও মাষ্টারপাড়া গ্রামের মৃত রফিজ উদ্দিনের ছেলে লেলিন হোসেনের নের্তৃত্বে টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজির এসব অপকর্ম চলছে। অভিযোগ রয়েছে, মেয়রের নাম ভাঙ্গিয়ে কাউকে কোন তোয়াক্কা করছে না তারা । বরং অভিযোগ পত্রে স্বাক্ষরকৃত ব্যক্তিদের নানা ভাবে হুমকি দিচ্ছেন টোল আদায়কারীরা। ট্রাক চালক রনি আহম্মেদ বলেন, সমাধান চেয়ে অভিযোগ পত্রে স্বাক্ষর করায় টোল আদায়কারী ফারুক হোসেন, লেলিন হোসেন, বাবুল, তসলিম, মিলনসহ কয়েকজন আমাকে ও স্বাক্ষরকারিদের গালিগালাজ ও মারপিটের হুমকি দেন ।
সড়ক পরিবহনের আড়ানী শাখার সভাপতি রায়হান কবীর বলেন, আমার কাছে টোল আদায়ের অসন্তুষ্ট প্রকাশ করে শ্রমিকরা অভিযোগ করলে আমি বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ পত্র জমা দিয়েছি। তবে সাময়িকের জন্য বাঘা থানার পুলিশ এসে বন্ধ করলেও বর্তমানে টোল আদায় অব্যাহত রয়েছে। আড়ানী শাখার সড়ক পরিবহনের সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম বলেন, আমি বর্তমান দেশের ভয়াবহ অবস্থার কথা চিন্তা করে এবং সরকারের আদেশ বাস্তবায়নের জন্যে এই চাঁদাবাজি বন্ধের সাথে একমত পোষন করি। তাই টোল আদায়কারীরা আমাকে মারধোরের হুমকি দেয়। আমাকে তারা বলে মেয়র মুক্তার অনুমতি দিলে তোর হাত পা ভেঙ্গে দিব। আর আমার আড়ানী বাজারের সবজির দোকান ভেঙ্গে ফেলতেও চেয়েছে তারা।
এদিকে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ওই পথ দিয়ে যাওয়ার পথে স্থানীয় এক সাংবাদিকের পথরোধ করে ফারুক হোসেন ও লেলিন হোসেন। তারা পৌর মেয়রের সাথে দেখা করানোর জন্য জোর করেন। পরে দেখা করার কথা জানালে,সাংবাদিকের মোটরসাইকেলের চাবি নিয়ে নেয় এবং এখানে কোন চাঁদাবাজি হচ্ছে না বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বলে দিতে বলেন ওই সাংবাদিককে।
বিষয়টি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, মন্ত্রীর রাজনৈতিক এপিএস এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, বাঘা থানার পুলিশ অফিসার (ওসি), আ.লীগের রাজনৈতিক নেতাদের অবগত করা হয়েছে। বিষয়টি জানার পর,বাঘা প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকদের পক্ষ থেকেও টোল আদায়কারী লেলিন ও ফারুকসহ সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে।
বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহিন রেজা বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। কিন্তু কেন টোল আদায় হচ্ছে, তা মেয়র মুক্তার সঠিক বলতে পারবেন। আমি ইউনিয়নগুলো দেখভাল করি। পৌরসভা স্থানীয় সরকার দেখভাল করেন।
আড়ানী পৌর মেয়র মুক্তার আলী বলেন, অভিযোগের পর টোল আদায় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে আমার অজান্তে কেউ টোল আদায় করলে অবশ্যই পৌরসভার পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নিব।##
No comments