বাঘায় চোর সন্দেহে গ্রাম্য শালিসে এক ব্যক্তির অর্থদন্ড
বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি ঃ
রাজশাহীর বাঘায় চুরির সন্দেহে গ্রাম্য শালিসে মুরাদ আলী নামে এক ব্যক্তির ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এই টাকা পরিশোধের জন্য এক মাসের সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। আর জরিমানার এই টাকা গোরস্থানে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। দন্ডপ্রাপ্ত মুরাদ আলী বাউসা হেদাতি পাড়ার জমির উদ্দিনের ছেলে। সোমবার (৯-৯-১৯) উপজেলার বাউসা বিষ্ট মন্ডলের বাজার এলাকায় বাউসা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাহিদের সভাপতিত্বে এ শালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত ছিলেন-বাউসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান শফিক, ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য শফিকুল ইসলাম ,ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতি নইমুদ্দিন ,ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিন ও শ্যামা প্রমুখ।
জানা যায়, পনের দিন আগে ওই গ্রামের জয়নাল নামের একজনের গরু চুরি হয়। এর আগে আরিফুলসহ গ্রামের কয়েকজনের বাড়ি থেকে মোবাইল চুরি হয়। এতে গ্রামের মাতব্বররা আলোচনা করেন গভীর রাতে যাদের রাস্তায় চলাচল করতে দেখা যাবে তাদেরকেই চুরির সাথে জড়িত থাকার সন্দেহ করা হবে। সেই সন্দেহ থেকে মুরাদ আলীকে চোর সন্দেহ করে গ্রাম্য শালিসে বিচার করা হয়েছে।
মুরাদ আলী জানান,কোন চুরির সাথে তিনি জড়িত নন। বর্তমান বাড়ির অদুরে আরেকটি বাড়ি করছেন। সেখানে নির্মান সামগ্রী রাখা আছে। সেগুলো চুরি না হয় সেজন্য রাতে দেখা শোনা করেন। সেখান থেকে রোববার দিবাগত রাত ২টায় বর্তমান বাড়িতে ফিরছিলেন। এসময় হেদাতি পাড়ার আঃ মজিদের ছেলে খোরশেদ আলী ও জামাল উদ্দিনের ছেলে জালাল উদ্দিন তাকে ধরে, এলাকার মোবাইলসহ ছোট খাটো যেসব চুরির হয়েছে,সেই চুরির বিষয়ে স্বিকার উক্তি নেওয়ার চেষ্টা করে। চুরির ঘটনায় কারা জড়িত,তাও জানেননা বলে তাদের জানান। পরে তারা মজিদের বাড়ির বাইরে রাতভর বসিয়ে রেখে সোমবার সকালে শালিসি বৈঠকে হাজির করেন। সেই শালিস বৈঠকে চুরির ঘটনায় জড়িত থাকার কোন প্রমান করতে পারেনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, পরিকল্পিতভাবে মুরাদকে ফাঁসানো হয়েছে। রাতে যারা তাকে ধরেছে, তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ রয়েছে। চুরির ঘটনার সাথে মুরাদের জড়িত থাকার কোন প্রমান পাওয়া যায়নি। এর আগেও চুরির সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে ওইসব লোকজনসহ আরো কয়েকজন সইদুল ইসলামের ছেলে আতিকুর রহমান ও সাজদার আলীর ছেলে সোহাগকে মারপিট করেছে।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন,চুরি যাওয়া মালামাল তার কাছে পাওয়া যায়নি। চুরির সাথে জড়িত থাকার কথা অস্বিকার করলেও গ্রামের লোকজন তাকে সন্দেহ করে শালিসে জরিমানা করেছে। জরিমানার টাকা গোরস্থানে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে আগে জানতে পাননি।

No comments