Header Ads

  • সর্বশেষ খবর

    চারঘাটে রস ছাড়াই তৈরি হচ্ছে খেজুরের গুড়!


    আব্দুল মতিন, চারঘাট:
    রাজশাহীর চারঘাট ও বাঘার খেজুর গুড়ের আলাদা একটা খ্যাতি রয়েছে দেশজুড়ে। চাহিদার সঙ্গে তাই পাল্লা দিতে এই দুই উপজেলায় এখন ভেজাল খেজুরের গুড় তৈরির মচ্ছব চলছে। সামান্য পরিমান খেজুর রসের সঙ্গে চিনি, আটা, হাইড্রোস, ফিটকারি, সোডা, চুন, নারিকেলের তেল, ও রং মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে খেজুরগুড়।চারঘাট উপজেলা প্রশাসনের কয়েকটি অভিযানে বিপুল পরিমাণ ভেজাল গুড় নদীতে ফেলে নষ্ট করা হলেও থামেনি ভেজালের কারবার।
    চারঘাট উপজেলাসহ রাজশাহীর বিভিন্ন হাট বাজারে দেদারছে বিক্রি হচ্ছে মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এই গুড়।চিনি ও কেমিক্যাল মিশিয়ে ভেজাল গুড় তৈরি ও বিক্রি ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন থেকে একাধিকবার সতর্ক মাইকিং ও গ্রামে গ্রামে বিভিন্ন প্রচারনা চালানো হয়েছে।তবু বিভিন্ন কৌশলে সক্রিয় হয়ে উঠেছে ওই অসাধু চক্রটি।
    সূত্র জানায়, বাজারে চিনির চেয়ে গুড়ের দাম বেশি থাকায় এবং বেশি লাভের আশায় অসাধু ব্যবসায়ীরা ভেজাল গুড় তৈরিতে ঝুঁকছেন।চারঘাট উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বাড়িতে বাড়িতে গড়ে উঠেছে ভেজাল গুড় তৈরির কারখানা। পরে এসব ভেজাল গুড় ছড়িয়ে পড়ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।এসব ভেজাল খেজুর গুড় তৈরি চক্রের দৌরাত্ম্যে হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃত খেজুর গুড় তৈরির কারিগররা।
    এদিকে সামান্য কিছু লাভের আশায় এসব অসাধু ব্যবসায়ীর কবলে পড়ে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকির মুখে রয়েছেন সাধারণ মানুষ।
    উপজেলার কাঁকড়ামারী ও দিড়িপাড়া এলাকার নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক দুজন ভেজাল কারবারি জানান,তারা দীর্ঘ দিন যাবৎ এই ভেজাল গুড় তৈরি করছেন।খেজুরের রস না থাকলে বাজার থেকে গুড় কিনে বাড়িতে এনে ভালো করে জাল দিয়ে তার সাথে চিনি, হাইডোজ এবং রঙ দেয় তারা। এতে খেজুরের রস ছাড়া অবিকল খেজুরের গুড় তৈরি হয়ে যায়।
    তারা আরো বলেন, শুধু আমরাই না মৌসুম এলে এরকম ভেজাল গুড় তৈরি করে উপজেলার কমপক্ষে অর্ধশতাধিক ব্যক্তি। বাংলাদেশের সব জিনিসেই ভেজাল আমাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই।
    এ উপজেলায় একটি চক্র দীর্ঘ এক দশক ধরে মৌসুমে সামান্য খেজুরের রস কিংবা রস ছাড়াই সামন্য গুড় গলিয়ে ভেজাল গুড় তৈরি করে আসছে। এক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে চিনি তৈরির উচ্ছিষ্ট (চিটাগুড়), আটা, চিনি, নারিকেল তেল,ফিটকিরি ও ডালডা। রঙ আনতে মেশানো হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে বিষাক্ত কেমিক্যাল আর খড় পঁচানো পানি। তৈরির পর এসব খেজুরের গুড় হিসেবে বাজারজাত করছে তারা।
    এ ব্যাপারে চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মোজাম্মেল হক জানান,একমাত্র চিনি ও আটা বাদে ভেজাল গুড় তৈরির অন্যান্য সব উপাদানই মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। এতে বিভিন্ন বিষাক্ত কেমিক্যাল মেশানো থাকায় তা আর খাওয়ার উপযোগী থাকে না। এ ধরনের ভেজাল গুড় খেলে কলেরা, ডায়রিয়া, হজম শক্তি হ্রাসসহ পেটের পীড়া হয়ে থাকে।
    এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ নাজমুল হক বলেন, যে চিটাগুড় দিয়ে নতুন খেজুরের গুড় তৈরি হয়, সেই চিটাগুড় গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ইতোমধ্যে আমরা এসব ভেজাল গুড় তৈরি চক্রের বিরুদ্ধে কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করেছি। জনস্বার্থে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

    No comments

    Post Top Ad

    ad728

    Post Bottom Ad

    ad728