চারঘাটে অবৈধ পথে আসছে গরু, রয়েছে করোনা ভাইরাস আতঙ্ক!
নিজস্ব প্রতিবেদক, চারঘাট:
চারঘাট উপজেলার কয়েকটি পয়েন্ট দিয়ে অবৈধভাবে আসছে বিভিন্ন রোগাক্রান্ত ভারতীয় গরু। আবার যেসব রাখাল অবৈধ পথে ভারত থেকে গরু নিয়ে আসছে তারা কোনো স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই বাংলাদেশে ঢ়ুকছে। এতে সাধারন মানুষের মনে করোনা ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তবুও বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে প্রবেশ করছে ভারতীয় গরু।
জানা গেছে, ভারত থেকে অবৈধভাবে আসা গরুর কোন ধরনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে না। এতে এসব গরুর মাংস মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর বলে মনে করছেন ডাক্তাররা। এসব গরুর শরীরে বিষাক্ত ইনজেকশন প্রয়োগের ফলে সেগুলো এক থেকে দুই মাসের মধ্যে মারা যায়। এসব রোগাক্রান্ত গরু নিয়ে এসে দেশীয় গরুর সাথে বেধে রাখা হয়। তাতে দেশীয় পশুর বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে বলে জানান স্থানীয়রা।
অপরদিকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মত বাংলাদেশেও দেখা দিয়েছে করোনা ভাইরাস আতঙ্ক।সেজন্য দেশের প্রতিটি সীমান্তে স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে বিদেশ ফেরতদের দেশে ঢ়ুকতে দেওয়া হচ্ছে।কিন্তু যারা অবৈধ পথে গরু নিয়ে দেশে প্রবেশ করছে ,তাদের কোনো প্রকার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার সুযোগ নেই।গরু আনতে গিয়ে রাখালরা লম্বা সময় নিয়ে ভারতে থাকে।সেজন্য চারঘাট উপজেলার স্থানীয় বাসিন্দারা এসব রাখালদের মাধ্যমে করোনা ভাইরাস ছড়ানোর আশংকা করছেন।
জানা যায়, স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয় সীমান্তে ভারতীয় গরু আনা নেয়া ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে এবং ভারতীয় গরু করিডোরের মাধ্যমে ছাড়পত্র নিয়ে নির্বিঘ্নে দেশের বিভিন্ন স্থান দিয়ে বিট বা খাটাল প্রথা চালু করে। এর অংশ হিসেবে উপজেলার ইউসুফপুর ও চারঘাটে বিওপি’র অধীনে খাটালের অনুমতি দেয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন যাবৎ চারঘাটে খাটাল বন্ধ রয়েছে। চারঘাট উপজেলা আইনশৃঙ্খলার মিটিংয়ে বারবার খাটাল চালুর কথা উপস্থাপন করলেও বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে কর্তৃপক্ষ তা বন্ধ রেখেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা যায়, প্রতি রাতেই উপজেলার ইউসুফপুর, গোপালপুর, পিরোজপুর, রাওথা সীমান্ত দিয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে চোরাইপথে গরু প্রবেশ করছে। আর এই চোরাই গরু আমদানী সিন্ডিকেটের প্রধান উপজেলার রাওথা গ্রামের তজলু মেম্বার সিন্ডিকেট ও বেশ কিছু প্রভাবশালী ব্যবসায়ী। মূলত প্রভাবশালী ঐ সিন্ডিকেটের লোকজনই দাপটের সাথে প্রতিনিয়ত এসব রোগাক্রান্ত গরু অবৈধ ভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসছে বলে এলাকাবাসী দাবি করেছেন।
এলাকাবাসী জানান, সীমান্তের এ পয়েন্টগুলো দিয়ে সারা বছরই কম বেশি গরু উঠে। রাত গভীর হলেই দলে দলে তারা ওই এলাকা দিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। রাতারাতি ধনী হওয়ার নেশায় এ কাজ করতে গিয়ে ইতোমধ্যে ওই সীমান্তে বেশ কয়েকজন যুবক ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এর হাতে ধরা পড়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। অনেকে ভারতে জেলের ঘানি টানছেন। তারপরও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী লোভে পড়ে চোরাই পথে গরু আমদানি করছেন।
চারঘাট উপজেলা পুলিশিং কমিটির সাধারন সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বাদশা বলেন, পৃথিবীর সকল মানুষ এখন করোনা ভাইরাস আতঙ্কে রয়েছে।আর গরু ব্যাবসায়ী ও রাখালরা প্রতিনিয়ত অবৈধ ভাবে ভারতে যাচ্ছে এবং আসছে।খুব দ্রুত তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার আওতায় নিয়ে আসতে ও অবৈধ পথে গরু ব্যবসা বন্ধের দাবী জানিয়েছেন তিনি।
অবৈধ পথে গরু আসার ব্যাপারে কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার রফিক জানান, আমি কিছুদিন হলো দায়িত্ব নিয়েছি।রাওথা এলাকার ব্যাপারে শুনেছি। অবৈধ পথে গরু নিয়ে আসার ব্যাপারে আমি ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়াও শুরু করেছি। যারা অবৈধ গরু ব্যবসার সাথে জড়িত তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
No comments