বাঘায় ছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে রাতে ২০ হাজার টাকায় মুক্ত করে নিলেন ছাত্রীর অভিভাবক!
বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি :
রাজশাহীর বাঘায় স্কুল ছাত্রীর মায়ের দেয়া অভিযোগে শাহানুর রহমান নামের এক কলেজ ছাত্রকে আটকের পর স্থানীয় নেতাদের তদবিরে রাতে থানা থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে তাকে আটক করা হয়েছিল বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার (১৬-০৭-১৯) সাড়ে ১১টায় এই কলেজ ছাত্রকে বাড়ি থেকে আটক করে পুলিশ। বিষয়টি ম্যানেজ করতে অনেক অর্থও খরচ করতে হয়েছে বলেও জানা গেছে। আর এই অর্থের ব্যয়ভার বহন করেছেন ছাত্রীর অভিভাবককে।
জানা গেছে, গত ৮ জুলাই প্রেমের দাবিতে রাজশাহী কলেজের মনোবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ও বাঘা উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়নের কিশোরপুর গ্রামের আজিজুল আলমের ছেলে শাহানুর রহমানের বাড়িতে আসে,একই গ্রামের কিশোরপুর স্কুল এ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণীর এক ছাত্রী। তার আকস্মিক আসাটা ভাবিযে তুলে ছেলের পরিবারকে। পরে ছাত্রীর চাচা খায়রুলকে ডেকে নেয়া হয় ছেলের বাড়িতে। কিন্তু ছাত্রী যাবোনা বলে ছেলের বাড়ির একটি কক্ষে দরজা দিয়ে ধারালো ব্লেড দিয়ে নিজের হাত নিজেই কেটে ফেলে। পরে তার চাচার মাধ্যমে ছাত্রীর বাবার বাড়িতে পাঠানো হয়। এই ঘটনার পর গত ১৬ জুলাই ছেলের বিরুদ্ধে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ দায়ের করেন তার মা আঙ্গুরা বেগম। অভিযোগের প্রেক্ষিতে এদিন সকালে কলেজ ছাত্র শাহানুর রহমানকে আটক করে পুলিশ। দিনভর থানা হাজতে থাকার পর রাতে মুক্তি পায় এই কলেজ ছাত্র। ছাত্রকে থানা থেকে বের করতে, বিশ হাজার টাকা ব্যয় করতে হয়েছে। বিয়ের সমাঝোতায় এই অর্থ ব্যয় করেছেন ছাত্রীর অভিভাবক। লেনদেনের এই টাকা ভাগাভাগি হয়েছে পুলিশ ও স্থানীয় তদবির কারকদের মধ্যে।
বুধবার (১৭ জুলাই) কিশোরপুর গ্রামে ওই ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে তার বাবা তাইজুল ইসলাম শান্তিকে পাওয়া যায়নি। কথা হলে তার মা আঙ্গুরা বলেন,বিয়ের সমাঝোতায় নিজেরা অর্থ খরচ করে অভিযোগ তুলে নিয়ে ওই ছাত্রকে থানা থেকে মুক্তি করে নিয়ে এসেছেন। কত খরচ হয়েছে,তা তিনি জানাতে চাননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে থানায় উপস্থিত থাকা ওই গ্রামের একজন বিশ হাজার টাকা খরচ হয়েছে বলে জানান। শাহানুরের চাচাতো ভাই হাফেজ শাহজামাল বলেন,বিশ হাজার টাকা খরচের বিষয়টি জানেন তিনি। পরে কত খরচ হয়েছে কি-না,তা জানেনা।
শাহানুরকে না পেয়ে কথা হয় তার সহোদর বড় ভাই সোহাগের সাথে। তিনি জানান, তার ভাই ষড়যন্ত্রের স্বীকার। বিয়ের শর্তে কোন সমাঝোতা হয়নি। অভিযোগের পর তার ভাইয়ের সাথে প্রেমের কথা শুনেছেন ছাত্রীর অভিভাবকের মাধ্যমে। আগে শুনেননি। তবে ৮ জুলাই বিয়ের দাবিতে তার বাড়িতে এসেছিল বলে স্বীকার করেছেন তিনি। তবে
বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আব্দুল ওয়াহাব বলেন, উভয়ের মধ্যে সমাঝোতা হওয়ায় তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। লেনদেনের বিষয়ে জানতে চাইলে তা এড়িয়ে যান তিনি।
No comments