চারঘাটে গাছে গাছে মুকুলের সমারোহ, আমের বাম্পার ফলনের আশা
আব্দুল মতিন, চারঘাট:
ফাল্গুনের শুরু থেকে চারঘাটের বাতাসে এখন ম-ম গন্ধ। চারঘাট উপজেলার যে কোনদিকে দৃষ্টি দিলেই চোখের সামনে মুকলিত আমের বাগান। বাগানের সারি সারি গাছে সুরভিত মুকুলের গন্ধ পাল্টে দিয়েছে এ অঞ্চলের বাতাস। ফাল্গুনে চারঘাটের এমন দৃশ্য পুরনো হলেও নতুন মুকুলের গন্ধে পুলকিত হয় মন। যে কারও প্রাণ জুড়িয়ে যাওয়ার মতো পরিবেশ পুরো উপজেলা জুড়ে।
আম সমৃদ্ধ রাজশাহীর চারঘাটের বাগানে বাগানে সোনালী মুকুলে ভরে গেছে গাছ। এখনও মুকুলিত হচ্ছে কোন গাছে। আবার মুকুল ঝরে আমগুটিতে রূপ নিচ্ছে। গাছে গাছে আর কদিন পরেই দৃশ্যমান হবে আলাদা চেহারা। দেখা মিলবে আমের সবুজ গুটি।
বাগানে বাগানে এখন পরিচর্যায় ব্যস্ত এ অঞ্চলের বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা। আবহাওয়া অনুক‚লে থাকলে এবারও আমের ভাল ফলনের আশা করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
সড়কের দুই ধারে সারি সারি আম বাগান আর আমের কথা উঠলেই চলে আসে রাজশাহীর চারঘাট ও বাঘা অঞ্চলের নাম। এ অঞ্চলের কৃষকরা জানান, বিগত যে কোন বছরের তুলনায় এবার আমের মুকুল ভাল হয়েছে। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুক‚লে থাকলে এবারও আমে ভরে উঠবে এ উপজেলা।
রাজশাহীর সবচেয়ে বেশি আমের চাষ হয় জেলার চারঘাট ও বাঘা উপজেলায়। চারঘাট উপজেলায় ৩ হাজার ৯০০ হেক্টর আম বাগানে প্রায় দেড় শতাধিক জাতের আম গাছ রয়েছে। সব বাগানের গাছে গাছেই সুবাস ছড়াচ্ছে সোনালী মুকুল।
চারঘাটের বাগান মালিকরা জানান, মাঘের শুরুতে আম গাছের ডালে ডালে মুকুল ফুটতে শুরু করে। এ সময় বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা মুকুলের পরিচর্যা শুরু করেন। তাদের মতে, গাছে গাছে যে পরিমাণ মুকুল এসেছে, তাতে সিকিভাগ টিকে গেলেও বাম্পার ফলন হবে।
উপজেলার ভায়ালক্ষীপুর গ্রামের আম চাষী আলী আকবর জানান, গাছে মুকুল আসার পর থেকে আম পাড়া পর্যন্ত ৫ থেকে ৬ বার কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। তাতে হেক্টরে ৩৮ থেকে ৪৫ হাজার টাকার বালাইনাশক লাগে। আম চাষীরা আশা করছেন এবার আবহাওয়া অনেকটাই অনুকূলে রয়েছে। শুরুতে গাছে যে পরিমাণ মুকুল ও গুটি দেখা দিয়েছে তাতে আমের বাম্পার ফলন হবে।
চারঘাট উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার আগেই পর্যাপ্ত পরিমাণ আমের মুকুল গাছে এসেছে।
কৃষি বিভাগ জানায়, এখন আম চাষের ধরন পাল্টেছে। আম চাষীরা বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ ও বাজারজাত করে আসছে। গত কয়েক বছরে বেড়েছে আম চাষের আওতা। এসব বাগানে আমের রাজা ফজলি, গোপালভোগ ছাড়াও তোতাপরি, বৌভুলানী, রানীপছন্দ, জামাইখুসি, গোপাললাড়ু, হিমসাগর, বৃন্দাবন ও হালের রানী পছন্দ ও আম্রপালি তো রয়েছেই। কৃষি বিভাগ জানায়, এবার প্রায় ৮০ শতাংশ গাছে মুকুল ফুটেছে।
চারঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুনজুর রহমান বলেন, এবার শীত কম, তাপমাত্রা বেশি। এ জন্য আগাম মুকুল এসেছে। আবহাওয়া শেষ পর্যন্ত এমন থাকলে আমের ফলনে কোন সমস্যা হবে না। ভাল ফল পাবেন কৃষকরা।##

No comments