ধর্ষনের শিকার ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীকে নিয়ে বিপাকে পরিবার
নিজস্ব প্রতিবেদক, চারঘাট :
রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার মাড়িয়াতে ধর্ষণের শিকার ১২ বছরের প্রতিবন্ধী এক কিশোরী বর্তমানে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এই প্রতিবন্ধী অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তার পরিবার।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে ধর্ষনের শিকার হয়ে ঐ কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে ৫ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার মসজিদের এক ইমাম ও আবরী শিক্ষককে অভিযুক্ত করে মামলা করেন কিশোরীর বাবা। অভিযুক্ত ওই ইমামের নাম শাজাহান আলী। তিনি উপজেলার শলুয়া সরকার পাড়া মসজিদের ইমাম এবং স্থানীয় ফতেপুর ফুরকানিয়া মাদ্রাসার আরবী শিক্ষক। চারঘাটের কানোছগাড়ী গ্রামে গত ২০ বছর ধরে তিনি বসবাস করেন। তবে তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালিতে। ধর্ষণের শিকার কিশোরী তার প্রতিবেশী। ঐ ইমাম আদালতে নিজের দোষ স্বীকার করে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, ধর্ষনের শিকার ঐ ১২ বছরের প্রতিবন্ধী কিশোরী বর্তমানে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। খেয়ে না খেয়ে পড়ে আছে নিজ বাড়ীতে। হাত পা ফুলে গেছে, ঠিকমত চলাফেরাও করতে পারছে না। সারাদিন বাড়ীতে বসে শুধুই অঝরে কাঁদে কিশোরী মেয়েটি। জানা যায়, প্রতিবন্ধী কিশোরীর মা নিজেও প্রতিবন্ধী, ভাইটাও বেকার। বাড়িতে উপার্জনক্ষম ব্যাক্তি একমাত্র ঐ কিশোরীর বাবা। মানুষের জমিতে একটি টিনের ঘরে বসবাস করেন তারা। চরম অর্থকষ্টে তিনবেলা ঠিকমত খেতে পর্যন্ত পারেন না, তার সাথে অসুস্থ অন্তঃসত্ত্বা মেয়ের পরিচর্যা। আর্থিক ও মানসিক বিপর্য়য়ে পড়া পরিবারটির দিন কাটছে শুধুই কান্না দিয়ে। চরম বিপাকে পড়া পরিবারটির কিশোরী মেয়েটিকে নিয়ে এখন অসহায় জীবন যাপন করেছে।
প্রতিবন্ধী কিশোরীর বাবা বলেন, আমার মেয়ের অবস্থা খুবই করুন। হাত পা সব ফুলে গেছে। ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেছিলাম, বলেছে এ অবস্থায় সিজারিয়ান অপারেশন করা যাবে না। বাসায় নিয়ে গিয়ে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ান। আমার তো সেরকম টাকা পয়সা নেই, মেয়েটিকে বাঁচাতে চাই। তিনি কাঁদতে কাঁদতে তার প্রতিবন্ধী মেয়ের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করেন।
এনজিও এসিডির সোসাল সাপোর্ট কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম বাদশা বলেন, আমি নিজেও কিশোরীটিকে দেখে এসেছি। সে এখন খুবই কষ্টে দিন যাবন করছে। আমাদের সবারই উচিত সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে মেয়েটির পাশে দাঁড়ানো। মেয়েটিকে সাপোর্ট দেওয়া।
এ বিষয়ে চারঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মুহাম্মদ নাজমুল হক বলেন, এতটুকু মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়াটা অনেক কষ্টকর বিষয়। আমাদের কাছে ভুক্তভোগী পরিবার লিখিত আবেদন করলে আমরা অবশ্যই তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবো।

No comments